মেঘনা নদীতে অবাঁধে চলছে নৌ-চাঁদাবাজী
নিজস্ব প্রতিবেদক
মেঘনা নদীতে বিভিন্ন নৌযানে পলিথিন জাকিরের সন্ত্রাসী বাহিনী ব্যাপক চাঁদাবাজি করছে বলে অভিযোগ করেছেন নৌযানের মালিকরা। এ চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে অতিষ্ট হয়ে নৌযান মালিকরা বিআইডব্লিউটিএ বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার প্রবাহিত মেঘনা নদীতে শুল্ক আদায়ের নামে অবাঁধে চলছে এ নৌ-চাঁদাবাজী।
নৌযান মালিক ও শ্রমিকরা জানান, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, সিলেট, কিশোরগঞ্জসহ দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল থেকে পাথর, বালু, কয়লাসহ বিভিন্ন পণ্যবাহী জাহাজ মেঘনা নদীর সোনারগাঁ উপজেলার নুনেরটেক, বৈদ্যেরবাজার ও মেঘনা সেতু এলাকা হয়ে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, শরীয়তপুরসহ আশপাশের জেলায় যাতায়াত করে। এসব নৌযান ও স্থানীয় ভাবে চলা বিভিন্ন বালুবাহী ট্রলার, যাত্রীবাহী লঞ্চ থেকে ছোট ছোট নৌকায় করে প্রতিদিন শুল্ক আদায়ের নামে চাঁদাবাজি করছে সন্ত্রাসীরা। পিরোজপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি জাকির হোসেন নৌঘাট ইজারা নিয়ে নৌপথে শুল্ক আদায়ের নামে অতিরিক্ত চাঁদা আদায় করছে বলে জানিয়েছে নৌযান মালিকরা।
মেঘনা নদীর বিভিন্ন ঘাটে মালামাল লোড আন লোডের জন্য ইজারাদারদেরকে নির্দিষ্ট শুল্ক দিতে হয়। মালামাল ও নৌযানের ধরন অনুযায়ী এ শুল্কের পরিমান কম বেশী হয়ে থাকে তবে এ পথে চলাচলকারী নৌযানের চালক ও জাহাজের মাস্টাররা জানান, নির্দিষ্ট শুল্কের চেয়ে ইজারাদারদের সন্ত্রাসী বাহিনী পাঁচ থেকে দশ গুণ বেশি শুল্ক আদায় করে। যা সরাসরি চাঁদাবাজী। শুল্কের বাইরে বাড়তি চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে শারীরিক ভাবে নির্যাতন করা হয়।
চাঁদাবাজীর ঘটনায় গত ২৮ আগষ্ট বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন এম.বি.হোসেন এন্ড মাকসুদ খাঁন জাহাজের মাস্টার মো. বাদল।
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, গত ২৮ আগষ্ট বুধবার বিকেল ৩টার দিকে হোলসিম ঘাটে মালামাল লোড করার পর শুল্ক হিসেবে চার হাজার টাকা নিয়ে তাকে চারশত টাকার রশিদ দেয়। পরে তর্ক বিতর্কের এক পর্যায়ে রশিদের মধ্যে চার হাজার টাকা লিখতে বাধ্য হয়।
তিনি আরো বলেন, গত ৫ আগষ্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বর্তমানে তত্তাবধায়ক সরকার হয়েও আজও আওয়ামীলীগ নেতাকে চাঁদা দিতে হয়। তাহলে আমরা কি স্বাধীন দেশ পেলাম। শুনেছি মেঘনা এলাকায় পলিথিন জাকির নামে এক আওয়ামীলীগ নেতা এ নৌ চাদাবাজীর সাথে জড়িত।
এ ব্যাপারে ইজারাদার মো. জাকির হোসেন বলেন, আমি মেঘনা নদীর যে নৌ-ঘাট ইজারা নিয়েছি সেগুলো সরকার নির্ধারিত ভাবেই শুল্ক আদায় করছি। কোন বাড়তি টাকা নেযা হয় না। আমার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডবিøউটিএ) এর মধ্যে যে অভিযোগ দেয়া হয়েছে সেটা ঠিক নয়।
কিছুদিন যাবত একটি চক্র ভূয়া রশিদ ব্যবহার করে নির্ধারিত শুল্কের চেয়ে অধিক হারে চাঁদা আদায় করছে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) বরাবর আমি একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এর নারায়ণগঞ্জের উপ-পরিচালক শরিফ হোসেন জানান, অতিরিক্ত শুল্ক আদায়ের ঘটনায় একটি অভিযোগ আমাদের কাছে এসেছে। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইজারাদারকে শোকজ করা হয়েছে।
এাছাড়া কে বা কারা ভুয়া রশিদে অতিরিক্ত শুল্ক আদায় করছেন এ মর্মে ইজারাদারও আলাদা ভাবে একটি অভিযোগ করেছেন। আমরা উভয় অভিযোগ আমলে নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য পদক্ষেপ গ্রহন করছি।
0 Response to "মেঘনা নদীতে অবাঁধে চলছে নৌ-চাঁদাবাজী"
Post a Comment