দেশ গড়তে ব্যক্তি পরির্বতন নয়, নীতিরও পরিবর্তন করতে হবে - মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম
নিজস্ব প্রতিবেদক, সোনারগাঁ।
ইসলামিক আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেছেন, ৫ তারিখের পর যারা দেশে মিথ্যা মামলা, লুটপাট, জুলুম অত্যাচার করছেন তাদের হাতেও দেশ নিরাপদ নয়। তাদের মধ্যে আর আ'লীগের মধ্যে পার্থক্য কোথায়? আওয়ামী লীগের মধ্যে যারা ডাকাত না, জালেম না, অত্যাচারী না, তাদেরকে অত্যাচার করা যাবে না। আমি ওই সব ভাইদের বলবো যারা আওয়ামীলীগ করেছিলেন, যারা আদর্শবান। মনে রাখবেন আদর্শবান ব্যক্তির দল কখনো আ'লীগ হতে পারে না।
সময় আছে তওবা করুন। এমন দেশ আর আমরা চাই না।
গতকাল সোমবার বিকেলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় ইসলামিক আন্দোলন বাংলাদেশ সোনারগাঁ শাখার আয়োজনে গণ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা দূর্নীতি। দূর্নীতি দূর করতে না পারলে এ দেশের পরিবর্তন হবে না। এ দেশে ওসি পরিবর্তন হয়, এসপি পরিবর্তন হয় কিন্তু ঘুষ ঠিকই থাকে। আমরা চোর মুক্ত বাংলাদেশ চাই।
তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ দুই বারের বেশি যাতে না হয় সে ব্যাপারে আলোচনা চলছে কিন্তু আমি মনে করি শুধু ব্যক্তি পরির্বতন নয় সুন্দর দেশ গড়তে নীতিরও পরিবর্তন করতে হবে। আমরা একটি মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তোলতে চাই। যেখানে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রীস্টান সবাই যাতে সম অধিকার ভোগ করতে পারি।
তিনি বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে পতন করা হয়েছে। কিন্তু এ আন্দোলনের সূচনা কিভাবে হয়েছিল? আমি গত বছর মেয়র ইলেকশন করেছিলাম। ওই সময় আমার উপর হামলা হয়েছিল। তখন আমি রাস্তায় বসে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম শেখ হাসিনার পতন না করা পর্যন্ত রাস্তা থেকে সরবো না। আমি বলেছিলাম আল্লাহ যেন আওয়ামীলীগের পতন আমার নিজের চোখে দেখিয়ে দেন। ২০২৪ সালের ৫ আগষ্ট আমাদের সে আন্দোলনের চূড়ান্ত প্রতিফল হয়েছে। আমরা সার্থক হয়েছি।
তিনি বলেন, ছাত্রদের আন্দোলন তো শেখ হাসিনাকে পতনের জন্য ছিল না। তাদের আন্দোলন ছিল কোটার জন্য। পরে গড়াতে গড়াতে এটি সরকার পতনের আন্দোলনে রূপ নেয়।
তিনি আরো বলেন, বর্তমানে সংবিধানে জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্রবাদ, সমাজতন্ত্রবাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতা মূলনীতি হিসেবে বলা হচ্ছে। কিন্তু স্বাধীনতা আন্দোলনের সূচনায় ও ঘোষণা এ চার মূলনীতি ছিল না। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মূলনীতি ছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায় বিচার।
আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা এখন ধ্বংসের পথে। অটো পাশের মাধ্যমে মেধা নষ্ট করা হয়েছে। এসময় গণসমাবেশে জুলাইয়ে হত্যাকাÐের বিচার এবং গত ১৬ বছরে সংঘটিত রাজনৈতিক, প্রশাসনিক হত্যা, গুম ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচার, দুর্নীতিবাজ ও বিদেশে অর্থ পাচারকারীদের সব সম্পত্তি ক্রোক করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমার দাবি জানানো হয়।
ইসলামিক আন্দোলন বাংলাদেশের সোনারগাঁ শাখার সভাপতি হাজী নূরুল আমিন খান এর সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন, ইসলামী আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা মুহাম্মাদ দ্বীন ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর কবির, যুগ্ম সম্পাদক মুহাম্মদ আমান উল্লাহ, শিল্প ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক মুফতী ইমদাদুল হাসেমী, জেলার ইসলামী যুব আন্দোলনের সভাপতি মুহাম্মদ যুবায়ের হোসাইন, জেলার ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের সভাপতি মুহাম্মদ ওমর ফারুক, জেলার ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি মুহাম্মদ আশরাফ আলী এবং সহযোগী অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
0 Response to "দেশ গড়তে ব্যক্তি পরির্বতন নয়, নীতিরও পরিবর্তন করতে হবে - মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম"
Post a Comment